মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে পাঁচদিনের সার্বজনীন শারদীয় দুর্গোৎসব শুরুর পর সারাদেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা আনন্দে ভাসছে। ধূপ, ঢাকের বাদ্যের সঙ্গে মণ্ডপে মণ্ডপে উচ্চারিত হচ্ছে পুরোহিতের মন্ত্র। আজ (মঙ্গলবার) শুরু হয়েছে মহাসপ্তমী। রীতি অনুযায়ী সকাল পৌনে নয়টায় নবপত্রিকা প্রবেশ ও সপ্তমীবিহিত পূজা শুরু হয়েছে। পূজা শেষে ভক্তরা অঞ্জলি দেবেন। মহাসপ্তমীতে শুরু হয় মূলত দুর্গোৎসবের মূল পর্ব। ষোড়শ উপাচারে অর্থাৎ ষোলটি উপাদানে দেবীর পূজা করা হয়।

প্রথমে ত্রিনয়নী দেবী দুর্গার চক্ষুদান, এরপর দেবীকে আসন, বস্ত্র, নৈবেদ্য, স্নানীয়, পুষ্পমাল্য, চন্দন, ধূপ ও দীপ দিয়ে পূজা সমর্পণ। এদিকে সপ্তমী পূজা উপলক্ষ্যে নানা রঙের পোশাক পরে বিভিন্ন বয়সী মানুষ পূজামণ্ডপে যাচ্ছেন। সপ্তমী পূজা উপলক্ষ্যে সন্ধ্যায় বিভিন্ন পূজামণ্ডপে ভক্তিমূলক সংগীত, রামায়ণ পালা, আরতিসহ নানা অনুষ্ঠান হবে। আগামীকাল (বুধবার) মহাষ্টমী পূজা, সেদিন হবে সন্ধিপূজা। এদিন রামকৃষ্ণ মিশনে কুমারী পূজা হওয়ার কথা থাকলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে এবারও তা হচ্ছে না। বৃহস্পতিবার সকালে বিহিত পূজার মাধ্যমে হবে মহানবমী পূজা।

আর শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) সকালে দর্পণ বিসর্জনের পর প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হবে দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। এক সময় ঢাকার দুর্গাপূজা সীমাবদ্ধ ছিল পুরান ঢাকার কোতোয়ালি এলাকায়। বিগত কয়েক বছর ধরে পুরো ঢাকায় পূজা আয়োজন হচ্ছে মহাসমারোহে। শাঁখারীবাজার, তাঁতীবাজার, ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, রামকৃষ্ণ আশ্রম, মিরপুর কেন্দ্রীয় মন্দির, ধানমন্ডি সর্বজনীন পূজা কমিটি, গুলশান বনানী সর্বজনীন পূজা উদযাপন পরিষদ, বনানী পূজা উদযাপন পরিষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলসহ বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে ও ব্যক্তিগতভাবে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে উত্সবমুখর পরিবেশে। করোনার কারণে আলোকসজ্জা সীমিত করা হয়েছে।

এ বছর সারাদেশে ৩২ হাজার ১১৮টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গত বছর মণ্ডপের সংখ্যা ছিল ৩০ হাজার ২১৩টি। ঢাকা মহানগরে এবার পূজা হচ্ছে ২৩৮টি মণ্ডপে। এর মধ্যে সূত্রাপুর থানায় সবচেয়ে বেশি ২৫টি মণ্ডপ, কোতোয়ালি থানায় ২১টি, ওয়ারীতে ১৬টি, গেন্ডারিয়ায় ১৪টি, হাজারীবাগে ১৩টি, তুরাগে ১২টি, বাড্ডায় ১০টি, বনানীতে ৯টি, মোহাম্মদপুরে ৯টি, দারুসসালাম ও গাবতলীতে ৮টি, ডেমরায় ৮টি এবং তেজগাঁও থানায় ছয়টি।